নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
মাছে-ভাতে বাঙালি আমরা। মাছ পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ব্যাপারই বটে; বরং মাছ নিয়ে আমাদের আগ্রহ ও জিভভেজা গল্পের ফিরিস্তিই দীর্ঘ। নাগরিক জীবনে মন পড়ে থাকে নদী থেকে সদ্য ধরে আনা জীবন্ত মাছের নাচনে। মনে পড়ে যায়, কবেকার নানারকম মাছের বাহারি স্বাদের ঝালঝোলের কথা।
আদি কাল থেকে মাছ ধরার নানা পদ্ধতি চালু আছে এ দেশে। গ্রামীণ জীবনের পথে-প্রান্তরে সেসব বৈচিত্রের দেখা মেলে। নদীমাতৃক জীবনাচারে জেলের মাছ ধরার পদ্ধতি আপনার নাগরিক জীবনকে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেবে।
মাছ ধরার প্রাচীণ পদ্ধতির একটি হলো কাঠা দিয়ে মাছ শিকার। এই পদ্ধতিতে খাল, বিল, ডোবা বা পুকেরে প্রথমে গাছের ডালপালা দেওয়া হয়। তারপর কচুরিপানা দিয়ে সে জায়গা ঢেকে দেওয়া হয়। ফলে সেখানে আর অন্য কারও মাছ ধরার নিয়ম থাকে না। কাঠা হিসেবে সবচেয়ে কার্যকর তেতুল গাছের ডালপালা। এই ডালে কাঠা দিলে মাছ বেশি পাওয়া যায়। বর্তমানে তেতুলের ডাল পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আবার দামও বেশি।
বিল, ডোবা বা জলাশয়ে গাছের ডালপালা ও কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করা হয় ঘের। এটাকে তাড়াশের মানুষ বলে কাঠা দিয়ে মাছ শিকার। ছবি : রেজাউল করিম ঝন্টু
কাঠা ও কচুরিপানা দিয়ে ঘের তৈরি করার পর সেখানে বস্তাবন্দি করে খাবার দেওয়া হয়। খাবারের ঘ্রাণে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ আসে। মাছ এই জায়গাটাকে নিরাপদ মনে করে। যেন তার অভয়ারণ্য। ধীরে ধীরে ঘের থেকে পানি কমতে থাকে। মাছের ঘনত্ব বাড়তে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের পর এখান থেকে মাছ সংগ্রহ করা হয়।
মৎস্য ব্যবসায়ী আনিস জানান, বন্যার সময় আমরা খালগুলো কিনে নিই, তারপর তাতে ডাল ও কচু দিয়ে ঢেকে দিই, যাতে কেউ মাছ মারতে না পারে। মাছকে আকৃষ্ট করতে পর্যাপ্ত খাবার বাঁশের সঙ্গে বস্তা দিয়ে বেঁধে দিই।
দেখা গেছে, বর্তমানে প্রায় লোকই বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করে। কাঠা দিয়ে মাছ শিকারের দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। সেই জলাশয়, বিল আর ডোবাগুলোই তো হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। একদিন কাঠা দিয়ে মাছ শিকারের ব্যাপারটিও হারিয়ে যাবে।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ