ঢাকা, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯ আশ্বিন ১৪৩০, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

মদনা টিয়ার আবাসস্থল ধ্বংসের পাঁয়তারা

প্রকাশনার সময়: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩২ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৪৩

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এবং পর্যটন ও খাদ্য সমৃদ্ধ অঞ্চল সীমান্তবতী শেরপুর জেলা। পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় এ জেলায় বহু পশু-পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণী বসবাস করে থাকে। হরেক রকম পাখির দেখা মিলে এ জেলায়।

কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে অনেক সুন্দর-সুন্দর পাখি। এর মধ্যে মদনা টিয়া পাখি অন্যতম। টিয়া পাখির বিভিন্ন জাত আছে। এর মধ্যে মদনা টিয়া দেখতে অনেকটা সুন্দর প্রকৃতির হয়। এই বিপন্ন প্রায় মদনা টিয়ার পছন্দের আবাসস্থল শেরপুরের গারো পাহাড় অঞ্চলের পানিহাতা শালবন।

কিছু টাকার লোভে এ শালবনটি আবারও ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। বছর কয়েক আগেও শালবন কাটার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিন্তু সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি আবারও এ শালবন কাটার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যে সমস্ত গাছ কাটা হবে ইতোমধ্যে ওইসব গাছ মার্কিংও করা হয়েছে।

পানিহাতা চার্চের পুরোহিত রেভারন্ড চাম্বু ম্রং জানান, এ বনভূমিতে চার্চের ৪১ একর জমি রয়েছে। সেখানে শালবন রয়েছে। ওইসব শালগাছ কাটার কোনো উদ্যোগ স্থানীয় চার্চ কর্তৃপক্ষ নেয়নি। ঢাকাস্থ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তাদের জানা নেই। কিন্তু পানিহাতা বনভূমির আওতাভুক্ত ময়মনসিংহের গোপালপুর রেঞ্জ অফিসার সাব্বির জাহাঙ্গীর জানান, পানিহাতা চার্চ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গাছ কাটার জন্য একটি আবেদনপত্র হাতে পেয়েছেন। এ ব্যাপারে সরেজমিনে পরিদর্শনের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শালবন নিধনের ব্যাপারে শেরপুর বার্ড করজারভেশন সোসাইটির সভাপতি সুজয় মালাকার ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান জানান, পানিহাতা চার্চ এলাকার বনভূমির শালবাগান বিপন্ন প্রায় মদনা টিয়ার আবাসস্থল। কয়েক বছর আগে সেখানে মাত্র কয়েক জোড়া মদনা টিয়া ছিল। তখনও শাল গাছ কাটার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিন্তু তাদের প্রতিবাদের মুখে তা স্থগিত হয়। বর্তমানে এ শালবনে ২ শতাধিক মদনা টিয়া ছাড়াও পাহাড়ি ময়না, লটকন টিয়াসহ নানা প্রজাতির পাখির নিরাপদ আবাসস্থল। বন্যপ্রাণিদের আবাসস্থল হিসাবে ব্যবহৃত বনভূমি ধ্বংস করা বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনের পরিপন্থি। দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত সভায় আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের গাছ কাটার উপর নিষেধাজ্ঞা আইন অনুমোদিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন শেরপুরের সভাপতি মেরাজ উদ্দিন বলেন, বনাঞ্চলের গাছ কাটা তো দূরের কথা, বাসা বাড়িতে বনজ গাছ রোপণ করলেও তা কাটতে বন বিভাগের অনুমতি লাগে। তাছাড়া পানিহাতা চার্চ কিভাবে ৪১ একর বনভূমির জমি পেল, তা অনুসন্ধান করা জরুরি।

নয়া শতাব্দী/এসএ/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ