ঢাকা, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯ আশ্বিন ১৪৩০, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

পৃথিবী কেনা যাবে এই গ্রহাণু দিয়ে!

প্রকাশনার সময়: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:৪৩

সারা ব্রহ্মাণ্ডজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বহু গ্রহাণু। এগুলোর গঠন এবং আকৃতিও আলাদা আলাদা। কোনো কোনো গ্রহাণু খনিজ এবং ধাতব যৌগে পরিপূর্ণ তো কোনোটি শুধুই পাথরে ঠাসা। কিন্তু জানা আছে কি, মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে এমন এক গ্রহাণু ভেসে বেড়াচ্ছে, যার মূল্য সারা পৃথিবীর মোট অর্থনীতির থেকেও বেশি!

মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মাঝে থাকা এই বড় মাপের গ্রহাণুর নাম ১৬ সাইকি। ইতালীয় জ্যোতির্বিদ অ্যানিবেলে ডি গ্যাসপারিস ১৮৫২ সালের ১৭ মার্চ এই গ্রহাণু আবিষ্কার করেন।

গ্রিক দেবি ‘সাইকি’র নামে গ্রহাণুটির নামকরণ করা হয়েছে। মহাবিশ্বে এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় গ্রহাণুগুলোর মধ্যে ১৬ সাইকি অন্যতম। গ্রহাণুটির গড় ব্যাস প্রায় ২২০ কিলোমিটার। কিন্তু কেন এই গ্রহাণুর দাম এত বেশি? ১৬ সাইকির প্রায় সমগ্র অংশ লোহা এবং নিকেল দিয়ে তৈরি। গ্রহাণুটির বেশ কিছু অংশ সোনা দিয়ে তৈরি বলেও দাবি করেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।

বিজ্ঞানীদের অনুমান, আমেরিকার বর্তমান বাজার অনুযায়ী, ১৬ সাইকির আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোয়াড্রিলিয়ন ডলার। যেখানে বিশ্বের অর্থনীতি ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলারের। সংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে গেলে, বিশ্বের অর্থনীতি ৭৪০০০০০০০০০০০০ ডলার। গ্রহাণুটির মূল্য প্রায় ১০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ ডলার। অর্থাৎ, ১-এর পিঠে ৩১টি শূন্য! এর অর্থ, কোনো দেশ যদি এই বহুমূল্য পাথর দখল করতে সক্ষম হয়, তাহলে বিশ্বের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলার ক্ষমতা থাকবে ওই দেশের। ১৬ সাইকি গ্রহাণুটির মোট মূল্য পৃথিবীর সমস্ত মুদ্রার ১ লাখ ৩৫ হাজার গুণ বেশি। নাসা মনে করছে, ১৬ সাইকিতে যে লোহা এবং নিকেল রয়েছে, তার ঘনত্ব পৃথিবীতে পাওয়া লোহা এবং নিকেলের ঘনত্বের থেকে বেশি।

বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী ১৬ সাইকির পৃষ্ঠে সিলিকেট খনিজ পদার্থের উপস্থিতির কথাও জানিয়েছেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে সেই গ্রহাণুতে হাইড্রক্সিল আয়ন থাকার প্রমাণও পেয়েছে নাসা। ১৬ সাইকির জন্ম নিয়ে মতান্তর রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল ব্রহ্মাণ্ডের কোনো নক্ষত্র ধ্বংস হয়ে গ্রহাণুটির জন্ম হয়েছে। তবে এ নিয়ে আরও মতামত রয়েছে। ১৬ সাইকির দিকে অনেক দিন ধরেই নজর রেখেছে নাসা। এই গ্রহাণুর কাছে অনেক দিন ধরে একটি মহাকাশযান পাঠানোরও পরিকল্পনা করে চলেছে আমেরিকার এই গবেষণা সংস্থা।

২০১৪ সাল থেকে সাইকি নামেরই একটি মহাকাশযান গ্রহাণুটির কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে নাসা। এই প্রথম কোনো মহাকাশযান ওই ধাতব গ্রহাণুর উদ্দেশে রওনা দেবে। ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, গ্রহাণুটির কাছে মহাকাশযান পাঠানোর জন্য আমেরিকার বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘স্পেসএক্স’-এর সঙ্গে চুক্তি করেছে নাসা। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে সেই মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণের কথা রয়েছে। একটি ভারি রকেটে মূল মহাকাশযান এবং দু’টি ছোট মহাকাশযান ১৬ সাইকির দিকে উড়ে যাবে। ২০২৯ সালের আগস্ট মাসে সেটি গ্রহাণুটির কাছাকাছি পৌঁছানোর কথা। আনন্দবাজার।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ