ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০ আশ্বিন ১৪৩০, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

ঘুরে আসুন রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি

প্রকাশনার সময়: ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১১:১৯ | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১১:২৪

সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে সাহিত্যিকদের চরণভূমি মানেই যেন অন্যরকমের একটা ভালোলাগার জায়গা। যেখানেই তাদের পদধূলী বা বিচরণ ছিলো সাহিত্যপ্রেমীদের বারবার ছুটে যেতে দেখা যায় সেখানে। আর রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য বাঙালিদের মননে রয়েছে। রবীন্দ্রস্মৃতি বলতে কুষ্টিয়ার রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী বেশ নামকরা। তবে সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈত্রিক যে জমিদার বাড়িটি রয়েছে তা অনেকের কাছে অচেনা বা যাওয়া হয়ে ওঠেনি কোনো কারণে। তাই সময় করে ঘুরে আসুন রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি থেকে। দেখে আসুন রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত কিছু জিনিস আর তার সাহিত্যের কিছু নিদর্শন।

ইতিহাস

সিরাজগঞ্জ জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈত্রিক জমিদার বাড়িটি রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি নামে পরিচিত।

অষ্টাদশ শতাব্দীতে এই বাড়ীটিকে নীলকুঠি হিসাবে ব্যবহার করা হত। ১৮৪২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ইংরেজদের কাছ থেকে নিলামে বাড়ীটি কিনে নেন। ১৮৯০ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত মোট ৭ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারির কাজের জন্য শাহজাদপুরের এই কাছারি বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই বাড়ি থেকে চিত্রা, সোনার তরী, চৈতালি, গীতাঞ্জলী ও বিসর্জনের মতো বিভিন্ন সাহিত্যকর্ম রচনা করেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে ১৯৬৯ সালে শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষণ করার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নেয়া হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এই রবীন্দ্র কাছারি বাড়িকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

যা দেখবেন

প্রায় দশ বিঘা জায়গার উপর ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত রব্রীন্দ্র কাছারি বাড়িটিকে বর্তমানে রবীন্দ্র জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। জাদুঘরের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার ১৬টি কক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শৈশব থেকে প্রবীণ সময়ের বিভিন্ন ভঙ্গির ছবি, আলোকচিত্র ও ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষিত রয়েছে। যার মধ্যে কবির আঁকা শিল্পকর্ম, কবির শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের আলোকচিত্র, বেহারার পালকি, স্পিডবোট, কাঠের চেয়ার, টি টেবিল, পালংকসহ বিভিন্ন ব্যবহৃত জিনিস ও আসবাপত্র অন্যতম। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য রবীন্দ্র অনুরাগী দর্শনার্থী কবির স্মৃতি বিজড়িত এই স্থান পরিদর্শন করেত আসেন।

যেভাবে যাবেন

ঢাকার গাবতলি বা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে উত্তরবঙ্গগামী বাসে সিরাজগঞ্জ যাওয়া যায়। চাইলে ট্রেনেও সিরাজগঞ্জ ভ্রমন করতে পারেন। ঢাকার কমলাপুর অথবা বিমানবন্দর স্টেশান থেকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস শনিবার ব্যতীত সপ্তাহের ৬ দিন যাত্রা করে। সিরাজগঞ্জ জেলা শহর পৌঁছে অটোরিকশা বা সিএনজি নিয়ে রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি যেতে পারবেন।

যেখানে থাকবেন সিরাজগঞ্জ শহরে হোটেল আলিশান, হোটেল অনিক, আরমানী কমপ্লেক্স, জয়সাগর রেস্ট হাউজ ও উল্লাপাড়া ডাক বাংলোতে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

যেখানে খাবেন শাহজাদপুরে হোটেল ঘরোয়া, ফয়সাল ক্যাফে, আপ্যায়ন হোটেল, হাজি বিরিয়ানি ইত্যাদি খাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

যখন যাবেন রবিবার ও অন্যান্য সরকারী ছুটি ব্যাতিত মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি জাদুঘর খোলা থাকে।

তবে শুক্রবার বেলা ১২টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নামাজের বিরতি থাকে। আর সোমবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জাদুঘরে প্রবেশ করা যায়।

প্রবেশমূল্য বাংলাদেশী দর্শনার্থীদের জন্য জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা ও বিদেশি পর্যটকদের জন্য প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা।

নয়া শতাব্দী/এসএম/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ