বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০ আশ্বিন ১৪৩০

ঘুরে আসুন ‘বাংলার দার্জিলিং’ নীলগিরি

প্রকাশনার সময়: ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:১৪ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১২:১৬

পাহাড় ও মেঘের প্রতি ভালোবাসা থাকলে আপনার অবসরের গন্তব্য হতে হবে বান্দরবন। পাহাড়ে ঘেরা এই এলাকায় আপনি প্রাণ ভরে শ্বাস ও মেঘ ছুঁতে পারবেন। মেঘের ভেলায় কীভাবে প্রকৃতি সাজে তা দেখতে পারবেন। মনকে তাজা করে তুলতে তাই সময় পেলে ছুটে চলে যান নীলগিরিতে। বান্দরবনের নীলগিরিকে বলা হয় বাংলার দার্জিলিং। দীগন্ত জুড়ে সবুজ পাহাড় আর মেঘের লুকোচুরি যে কাউকে এর রূপ দিয়ে বিমোহিত করে রাখবে। যদি সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ২২০০ ফুট উচ্চতায় মেঘ ছোঁয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে নীলগিরি আপনার সেই ইচ্ছে পূরণ করবে। পাহাড় চূড়াতেই রয়েছে সেনাবাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পর্যটক কেন্দ্রগুলোর একটি নীলগিরি পর্যটক কেন্দ্র। বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ২২০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের নাম নীলগিরি।

যা দেখবেন

নীলগিরি থেকে চারপাশে চোখ মেলে তাকালে সারি সারি মেঘের পাহাড়ে আছড়ে পড়া ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্য আপনাকে বিমোহিত করবে। নীলগিরির চূড়া থেকে পাহাড়ের সারির পাশাপাশি আকাশ পরিস্কার থাকলে আপনার চোখে পড়বে বগালেক, বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ পাহাড় চূড়া কেওক্রাডং, কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত এবং চট্টগ্রাম বন্দর ও সাঙ্গু নদী। এ ছাড়াও নীলগিরির কাছের আদিবাসী গ্রাম থেকে পরিচিত হতে পারেন তাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সাথে। নীলগিরিতে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থাকায় নিরাপত্তা নিয়ে কোন বিভ্রান্তির কারণ নেই তাই পরিবার নিয়ে অনায়াসেই ঘুরে আসতে পারেন বাংলার দার্জিলিং খ্যাত নীলগিরি।

উপযুক্ত সময়

নীলগিরি তার রূপের পসরা সারাবছরই মেলে ধরে রাখে। একেক সময়ে একেক রূপের আঁধার নীলগিরি। সকালে মেঘের ভেলার খেলা, সূর্যোদয়ের আলোর খেলা। বিকেলের সূর্যাস্ত কিংবা জ্যোৎস্না রাতের মায়াময় চারপাশ আপনাকে মুগ্ধ হতে বাধ্য করবেই। সাধারণত বর্ষা, শরৎ ও হেমন্তে মেঘের ভেলার লুকোচুরি খেলা প্রত্যক্ষ করা যায় সুন্দর করে। আর এই জন্যে নীলগিরিতে খুব সকালে যেতে হবে। শরৎ আর হেমন্তের মেঘ আর নীল আকাশ মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকে। শীতে কুয়াশার চাদরে মুড়ে থাকে চারপাশ। সে এক দেখার মত দৃশ্য। তাই নীলগিরি যেতে পারবেন যেকোনো সময়ই। তবে বর্ষায় অতি বৃষ্টি হলে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা থাকে তখন অনেক সময় নীলগিরি যাবার রাস্তা বন্ধ থাকে।

যেভাবে যাবেন নীলগিরি যেতে হলে প্রথমে বান্দরবান আসতে হবে। ঢাকার আব্দুল্লাহপুর, আরামবাগ, কল্যাণপুর, গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে থেকে বাস বান্দারবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে বাসে বান্দরবান যেতে সময় লাগে ৮-১০ ঘন্টা।

ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে চট্রগ্রামগামী সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিতা, মহানগর গোধূলি এইসব ট্রেনে করে চট্রগ্রাম যেতে পারবেন। এ ছাড়া ঢাকা থেকে আকাশ পথে সরাসরি চট্রগ্রাম আসতে পারবেন। এরপর চট্টগ্রামের বদ্দারহাট ও দামপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে কয়েকটি বাস বান্দারবানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

বান্দরবান থেকে নীলগিরি যেতে পারবেন জীপ/চান্দের গাড়ি/মহেন্দ্র/সিএনজি অথবা লোকাল বাস দিয়ে। সবচেয়ে ভালো হয় রিজার্ভ গাড়ি নিয়ে গেলে। রাস্তায় কোনো সমস্যা না থাকলে যেতে সময় লাগবে দুই থেক সাড়ে দুই ঘণ্টা। নীলগিরিতে যদি মেঘের দেখা পেতে চান তাহলে আপনাকে খুব ভোরে রওনা দিতে হবে যেন ৭-৮ টার ভেতর নীলগিরি থাকতে পারেন।

আর যা দেখবেন নীলগিরি যাবার পথেই মিলনছড়ি ভিউ পয়েন্ট, শৈল প্রপাত ঝর্ণা, সাইরু হিল রিসোর্ট ও চিম্বুক পর্যটন কেন্দ্র পার হয়ে যেতে হবে। রিজার্ভ গাড়ি নিলে এই স্পট গুলোতে নেমে কিছু সময় অতিবাহিত করতে পারবেন। গাড়ি ঠিক করার সময় আগে থেকেই বলে রাখবেন।

কোথায় থাকবেন বাংলাদেশ সেনবাহিনী পরিচালিত নীলগিরি রিসোর্টে রাতে থাকার ব্যবস্থা আছে। ছয়টি কটেজে থাকার জন্য প্রতি রুমের ভাড়া পড়বে ৮,০০০ টাকা। এ ছাড়া বান্দরবানে থাকার জন্যে বেশ কিছু হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে।

কোথায় খাবেন নীলগিরিতে একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে, সেখানে খেতে হলে আগে থেকে অর্ডার করে রাখতে হবে। জনপ্রতি ৩০০-৬০০ টাকায় খেতে পারবেন। বান্দরবান শহরে খাওয়ার জন্যে রয়েছে বেশ কিছু রেস্তোরা, তার মধ্যে তাজিং ডং ক্যাফে, মেঘদূত ক্যাফে, ফুড প্লেস রেস্টুরেন্ট, রুপসী বাংলা রেস্টুরেন্ট, রী সং সং, কলাপাতা রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি অন্যতম।

নয়া শতাব্দী/এসএম/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ