ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০ আশ্বিন ১৪৩০, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

পরিবার নিয়ে ঘুরে আসুন ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে

প্রকাশনার সময়: ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১১:৩৯

একদিনের একটা ঝটিকা সফর দিতে চাইলে কোথায় যাবেন তা নিয়ে শুরু হয় চিন্তা। একজন প্রকৃতি দেখতে চান তো আরেকজন নদীর ঘুরে বেড়াতে চান, আর বাচ্চারা চায় বিভিন্ন রাইড। এতো চাহিদায় কার মন রক্ষা করবেন আর কোথায় বা যাবেন এই নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় অনেককেই। এর এক সহজ সমাধান হতে পারে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। রাজধানী ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুরের জয়দেবপুরের ছায়া সুনিবিড় পরিবেশে গড়ে উঠেছে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। গজারি বৃক্ষের আধিক্যের কারণে অনেকের কাছে এটি ভাওয়ালের গজারির গড় হিসাবেও পরিচিত। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় সকালে গিয়ে রাতের মধ্যেই ফিরে আসতে পারবেন।

যা দেখবেন

প্রায় ৫০২২ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ১৯৮২ সালে জাতীয় উদ্যানের স্বীকৃতি লাভ করে। উদ্যানের ২২১ প্রজাতির গাছের মধ্যে রয়েছে ৪৩ প্রজাতির বৃক্ষ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা ও ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। এ ছাড়াও রয়েছে ৬৪ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি যাদের মধ্যে ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণি, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও উভচর প্রাণি অন্তর্ভুক্ত। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ ও জীব বৈচিত্রে পরিপূর্ণ এ উদ্যানে ছুটির দিনে অনেকে পিকনিক এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।

ভাওয়াল গড়ের ৩ নাম্বার গেট দিয়ে প্রবেশ করলে প্রথমেই টেরাকোটায় মোড়া প্রবেশ দ্বারের দুটি হাতির ভাস্কর্য নজরে পড়বে। উদ্যানের ভেতরে রয়েছে ৩১ টি পিকনিক স্পট, ১৯ টি চমৎকার কটেজ, অত্যাধুনিক রেস্ট হাউজ, প্রজাপতি বাগান, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র ও শিশুপার্ক। উদ্যানের সারি সারি বৃক্ষের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হলে বিশ্রামের জন্য রয়েছে বেঞ্চ বা ছাউনি। বিস্তৃত এই বনের মাঝে আরো চোখে পড়বে সবুজ ধানক্ষেত, পুকুর বা ছোট লেক। লেকের জলে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সাথে সাথে পুরো উদ্যান দেখার জন্য রয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার।

প্রবেশমূল্য

সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্থ পর্যন্ত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান পরিদর্শন করা যায়। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। প্রবেশ মূল্যের সাথে শিশু পার্ক, ওয়াচ টাওয়ার, মিনি চিড়িয়াখানা এবং পাবলিক টয়লেটের চার্জ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস বা বাসে নিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে যথাক্রমে ৬০, ১০০ ও ২০০ টাকা প্রদান করতে হয়।

পিকনিক স্পট বা রেস্ট হাউজ ভাড়া নেওয়ার জন্য বন বিভাগের মহাখালি কার্যালয় থেকে অগ্রিম বুকিং দিতে হয়। এ ছাড়া ভাওয়াল গড় থেকেই সামান্য দূরে অবস্থিত রাজেন্দ্রপুর জাতীয় উদ্যানের রেঞ্জ কার্যালয় থেকেও নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের বুকিং নেওয়া যায়।

যেভাবে যাবেন গাজীপুর সদর থেকে ভাওয়াল গজারির গড় অর্থাৎ ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। জয়দেবপুর চৌরাস্তা পার হয়ে একটু সামনে এগোলেই হাতের ডান দিকে ভাওয়াল গড়ের প্রধান প্রবেশ পথ নজরে পড়বে।

ঢাকা থেকে নিজস্ব গাড়িতে অথবা মহাখালি, বিমানবন্দর বা রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে দিয়ে ময়মনসিংহগামী যেকোন বাসে ভাওয়াল উদ্যানে যেতে পারবেন। গুলিস্থান থেকে প্রভাতি বা বনশ্রী পরিবহনের বাসে উঠে ন্যাশনাল পার্কের ৩ নাম্বার গেটে নামার কথা বললে সরাসরি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেটে নামতে পারবেন।

যেখানে খাবেন ভাওয়াল গড়ের ভিতরে হালকা চা ও নাস্তা খাওয়ার ছোট টঙের দোকান ও ক্যান্টিন রয়েছে। তবে পিকনিক বা কোনও অনুষ্ঠানে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে কটেজে রানা-বান্না করার সুযোগ আছে

নয়া শতাব্দী/এসএম/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ