ঢাকা, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৮ জিলকদ ১৪৪৪

ছুটিতে ঘুরে আসুন সিলেট

প্রকাশনার সময়: ১৯ মে ২০২৩, ১৮:৩৮

পাহাড়, ঝরনা আর সবুজের প্রাচুর্যে ভরা সিলেট। সিলেটের চারদিকে ছড়িয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন সব পর্যটনকেন্দ্র। বছরের প্রায় সময়ই পর্যটকদের আনাগোনা থাকে সেখানে। সবুজে মোড়া পাহাড়ের কোলঘেঁষা পাথুরে নদী, বন, ঝরনা, চা বাগান; সবই দেখতে পাওয়া যায় এখানে। ছুটি কাটাতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন সিলেট থেকে। উপভোগ করতে পারেন সিলেটের নয়নাভিরাম দৃশ্য।

যা যা দেখবেন

জাফলং

জাফলং সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব ৬২ কিলোমিটার। এখানে ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতুও আকর্ষণ করে অনেককে। জাফলং পাথরের জন্যও বিখ্যাত। শ্রমজীবী মানুষেরা পাথরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেই বহু বছর ধরে।

লালাখাল

লালাখাল সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার একটি পর্যটন এলাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থান। লালাখালের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে গোয়াইন নদী। সেই নদীতে অসংখ্য বাঁক রয়েছে। নদীটির কূলে পাহাড়ি বন, চা বাগান এবং নানা প্রজাতির বৃক্ষরাজি রয়েছে। লালাখালের পানি নীল। জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা প্রবহমান পানির সাথে মিশে থাকা খনিজ এবং কাদার পরিবর্তে নদীর বালুময় তলদেশের কারণেই এই নদীর পানির রং এরকম দেখায়।

রাতারগুল

রাতারগুল জলাবন বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যা সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত। বনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর, আর এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি জলাবনের মধ্যে অন্যতম একটি। এটি বনবিভাগের অধীনে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখানে সবচেয়ে বেশি জন্মায় করচ গাছ। বর্ষাকালে এই বন ২০–৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। বাকি সারা বছর, পানির উচ্চতা ১০ ফুটের মতো থাকে।

বিছানাকান্দি

বিছানাকান্দি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। এটি মূলত একটি পাথর কোয়েরি; যেখানে নদী থেকে পাথর সংগ্রহ করা হয়। এই জায়গায় মেঘালয় পর্বতের বিভিন্ন স্তর এসে একবিন্দুতে মিলিত হয়েছে। মেঘালয় পর্বত থেকে নেমে আসা একটি ঝরনা এখানে একটি হ্রদের সৃষ্টি করেছে- যা পিয়াইন নদীর সাথে গিয়ে সংযুক্ত হয়েছে। এখানকার শিলা-পাথরগুলো একদম প্রাকৃতিক এবং এগুলো পাহাড়ি ঢলের সাথে পানির মাধ্যমে নেমে আসে। যেখানে ছোট-বড় পাথরের শয্যা পাতা! এর ওপর দিয়ে কুলকুল করে বয়ে যাচ্ছে স্বচ্ছ পানি। দেহমন প্রশান্ত করতে পর্যটকেরা শরীর এলিয়ে দেন সেই শয্যায় কিংবা মেতে ওঠেন জলকেলিতে। একবার শরীর এলিয়ে দিলে আর উঠতে ইচ্ছে করে না।

সাদা পাথর

ধলাই নদ পাড় হয়ে বালুপথ মাড়িয়ে সামনে এগোতেই চোখে পড়ে নিরেট পাথররাজ্য। পাথর ছুঁয়ে ধেয়ে নামছে পাহাড়ের স্বচ্ছ জল। বিশাল এলাকাজুড়ে দুদিকে নিরেট পাথররাজি আর মধ্যে স্বচ্ছ জল। মেঘালয় পাহাড়ের ওপর মেঘের আলিঙ্গন। এ যেন প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য সাদা পাথর। সব মিলিয়ে অদ্ভুত এক সৌন্দর্যের ক্যানভাস। এটি সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে অবস্থিত।

এছাড়াও দেখতে পারেন চা বাগান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরানের (রহ.) মাজার।

যেভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশ পথে সিলেটে যাওয়া যায়। আকাশ পথে প্রতিদিন কয়েকটি ফ্লাইট চলাচল করে।

সড়ক পথে হানিফ, শ্যামলী, গ্রীনলাইন পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি পরিবহন ঢাকা থেকে সিলেটে যায়। ভাড়া নন এসি ৪৭০ টাকা, এসি ১২০০ টাকা।

প্রতিদিন কয়েকটি ট্রেনও যায়। এর মধ্যে উপবন এক্সপ্রেস, পারাবাত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা ও কালনী এক্সপ্রেস অন্যতম। ভাড়া এসি চেয়ার স্নিগ্ধা ৬৩০ টাকা। এসি কেবিন ১১৪৯ টাকা। চেয়ার ৩২০ টাকা।

থাকবেন কোথায়

কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়; বরং নানান বিলাসবহুল ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রিসোর্ট আর হোটেলের জন্যও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সিলেট। এ জন্যই কর্মক্লান্ত শহরের বাসিন্দারা কোলাহলমুক্ত এই চায়ের রাজ্যে ছুটে আসেন। দেশের অন্যতম বিলাসবহুল রিসোর্টগুলোর সিংহভাগ সিলেটে অবস্থিত। এর মধ্যে পাঁচ তারকা রোজ ভিউ হোটেল, এটি সিলেট সদরের একটি জনপ্রিয় ও বিলাসবহুল হোটেল। এ ছাড়া আছে আধুনিক ও উন্নত সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন হোটেল গার্ডেন ইন, হোটেল নুরজাহান গ্র্যান্ড, লা ভিস্তা হোটেল, হোটেল স্টার প্যাসিফিক, হোটেল মিরা গার্ডেনসহ আরও অনেক হোটেল।

নয়া শতাব্দী/এসএম/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ