নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের ২৬ তম বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী সোমবার। সম্মেলনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে মিটিং মিছিলে ব্যস্ত সময় পার করছেন পদপ্রত্যাশীরা। দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা নেতারাও শীর্ষ পদে আসতে চালাচ্ছেন জোর তৎপরতা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্যাম্পাসের অনেক ত্যাগী নেতা। কেউ কেউ বলছেন শুধু সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হলেই দেখা মেলে তাদের। আবার অনেকের অভিযোগ সম্মেলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং আখের গোছাতে ক্যাম্পাসে আসছেন নিষ্ক্রিয় নেতারা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ক্যাম্পাসে অনিয়মিত ছাত্র নেতারা বলছেন এসব তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কার্যক্রমে দেখা যায় না বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম জ্যাককে। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করলে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। তবে সম্মেলন বাতিল হলে রাজনীতির মঠে আবার নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে জাকিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে এগুলো সব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। করোনাকালীন সময়েও আমি ক্যাম্পাসে থেকেছি। তাছাড়া প্রোগ্রামগুলোতেও আমি নিয়মিত থাকি।
কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ ক্যাম্পাসে অনিয়মিত। বিগত কয়েক বছর তাকে কোনো দলীয় কার্যক্রমে দেখা যায় না। গত বছর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হলে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। তবে সম্মেলন স্থগিত হলে ফের ক্যাম্পাস ছেড়ে দেন। সম্প্রতি সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আবার ক্যাম্পাসে এসেছেন এ যুগ্ম সম্পাদক। এ বিষয়ে ফয়েজ বলেন, আমি দীর্ঘদিন অসুস্থতাজনিত কারণে ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। অসুস্থ হবার আগে আমি রাজনীতিতে নিয়মিত ছিলাম।
নিষ্ক্রিয় আরেক নেতা মো. সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্স হল শাখার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ক্যাম্পাসের অধিকাংশ প্রোগ্রামগুলোতে অনিয়মিত শাখা সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার এ অনুসারী। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলনে তিনিও শীর্ষ পদ প্রত্যাশী। নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে এগুলো সব মিথ্যা অভিযোগ। আমি ক্যাম্পাসের প্রোগ্রামগুলোয় নিয়মিত অংশগ্রহণ করি।
অনিয়মিত আরেক নেতা অনিক মাহমুদ বনি। তিনি মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ক্যাম্পাসের কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে ২০১৯ সালের পর থেকে তাকে দেখা যায়নি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে ছিনতাই মামলা। এসব বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করার জন্য এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছি। আমাকে বিশ^বিদ্যালয়ে একটা পদ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। আমি শক্ত প্রতিদ্বন্দী হবো এই ভয়ে। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাকিবুল হাসান বাকি। ছাত্রলীগের বিগত দুই কমিটিতে ছিল না কোনো পদ। এছাড়া ২০১৬ সালে রাবি ছাত্রলীগের ২৫তম সম্মেলনের পর থেকে ক্যাম্পাসের কর্মসূচিগুলোতেও দেখা যায় নি। তবে এবারের সম্মেলনে তিনিও শীর্ষ পদ প্রত্যাশী। তার বিরুদ্ধে আলোচনায় আসতে ছাত্রদলের সঙ্গে সমঝোতা করে মারধর, মেয়েদের ইভটিজিং, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। তার হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও উত্তর পাওয়া যায়নি।
অনিয়মিত ও বির্তকিত এসব নেতাদের দৌঁড়ঝাপে ক্ষুদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পদ প্রত্যাশী ত্যাগী নেতা বলেন, ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন সম্মেলন নেই। আমরা সম্মেলন নিয়ে আসি আর একদল নিষ্ক্রিয় নেতা এসময় এসে হাজির হয়। তাদের উদ্দেশ্য নেতা হওয়া না, সম্মেলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। কেউ কেউ আবার নিজের আখের গোছাতেও এসময় এসে হাজির হন। তবে আমরা আশাবাদী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ যোগ্যতার মূল্যায়ন করবেন।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ