ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০ আশ্বিন ১৪৩০, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্ভয়ের আয়োজনে জলবায়ু ধর্মঘট

প্রকাশনার সময়: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৬:৪১

নির্ভয় ফাউন্ডেশন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোকে সাথে নিয়ে "Make Noise Raise Voice for Climate Justice" প্রতিপাদ্যে "Global Climate Strike 2023" শিরোনামে জলবায়ু ধর্মঘট পালিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ভাস্কর্যের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

এরআগে জলবায়ু সম্পর্কিত বিভিন্ন প্লাকার্ড ও ব্যানার হাতে স্লোগানে নজরুল ভাস্কর্য থেকে কেন্দ্রীর গ্রন্থাগারের সামনের দিক দিয়ে জয় বাংলা ভাস্কর্য পর্যন্ত জলবায়ু ধর্মঘট র‍্যালি করা হয়।

নির্ভয় ফাউন্ডেশন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পিআর আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী, নির্ভয় ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির এইচআর ম্যানেজার মৃত্তিকা দাশ দূর্বা, নির্ভয় ফাউন্ডেশন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ডিরেক্টর রবিউল ইসলামসহ ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সংগঠনের ৫৫জন প্রতিনিধি।

রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা সকলেই জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ভুক্তভোগী। পরিবেশকে বাঁচাতে হলে এখনই আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। বসে থাকার সময় নেই। জীবাশ্ম জ্বালানির উপর যে বিনিয়োগ, তা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তিকে প্রাধান্য দিতে হবে। নয়তো অতিরিক্ত কার্বন নিঃস্বরণের ফলে পৃথিবী জনমানবহীন হয়ে পড়ার আগে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

মৃত্তিকা দাশ দূর্বা বলেন, বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন উদ্বেগের বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তনে জীবাশ্ম জ্বালানি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। জ্বালানি পোড়ানোর ফলে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন হয় যা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে যা এবার ক্লাইমেট স্ট্রাইক এর মূল দাবি ছিল। সঞ্জয় কুমার মুখার্জী বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত বৃক্ষ নিধন করছি। আমাদের যানবাহন থেকে প্রতিনিয়ত কালো ধোয়া নির্গমন হচ্ছে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন আমরা ষড়ঋতু দেখি না। আমাদেরকে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করতে হবে। আমাদেরকে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, বনায়ন করতে হবে। পরিবেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্বের দিক থেকে যার যার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। একটা বিল্ডিং করতে গেলেও আমাদের পরিবেশ নিয়ে ভাবতে হবে। শুধু মুখে বললে হবে না, আমাদের প্রতিটি কাজে পরিবেশের কথা ভাবতে হবে।

আমরা আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে অনেক কিছুই করেছি, হাজার হাজার ভবন, রাস্তা করেছি। কিন্তু যে জিনিসটি করতে পারিনি সেটা হলো পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ। প্রতিটি রাস্তার ১০ কিলোমিটার দূরত্বে একটা বটগাছ থাকতো তাহলে ভালো হতো। আজকের কর্মসূচিতে আমি যে যার জায়গা থেকে পরিবেশের উপর সুবিচার করার আহ্বান জানাচ্ছি।

অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীতে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন। বিষয়টি এখন শুধু আলোচনার টেবিলেই সীমাবদ্ধ নেই, এটা এখন ছড়িয়ে পড়েছে মাঠ-পর্যায়ে আন্দোলনের মতো।

বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকের (সিআরআই) এক গবেষণায় দেখা গেছে, গেল ২০ বছরে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কুফলে মারা গেছে ৫ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর এর সরাসরি ফলাফল হিসেবে আবহাওয়া বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে ১১ হাজার। খরা, অতিবৃষ্টি, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়, তীব্র শীত, অসহনীয় তাপমাত্রা, বন্যা ও ভূমিধস আমাদের জানিয়ে দেয় জলবায়ু পরিবর্তন এক কঠিন বাস্তবতা, এক মূর্তিমান চ্যালেঞ্জ। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হলে বনভূমি ধ্বংস বন্ধ করতে হবে এবং বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন বাড়াতে হবে। সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির সন্ধান করতে হবে। প্রকৃতির ওপর মানুষের বিরূপ আচরণ বন্ধ করতে হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএ/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ