বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ২০ আশ্বিন ১৪৩০

খুবিতে রুমের লাইট বন্ধ করা নিয়ে শিক্ষার্থীকে মারধর

প্রকাশনার সময়: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:৫৪

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আবাসিক হলে রুমের লাইট বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমন শেখ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের কাছে এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী লিমন শেখ বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হলের ১১০ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে হলের কক্ষে লাইট জ্বালানো নিয়ে ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জারিফের সাথে ওই কক্ষের শিক্ষা ডিসিপ্লিনের সুমন ও লিমনের কথা কাটাকাটি হয়।

ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী জারিফ সবসময় গভীর রাত করে রুমে ফেরে এবং লাইট জ্বালিয়ে ব্যক্তিগত কাজকর্ম করে। এ নিয়ে গতকাল কথা কাটাকাটি হয় এবং কিছু সময়ের মধ্যে বনিবনা হয়ে যায়। পরে জারিফ সুমনের সাথে খারাপ ব্যবহার ও তাকে হুমকি দিলে লিমন কিছুটা উত্তেজিত হয় এবং তার সিনিয়র সুমন তাকে ধমক দিয়ে থামতে বলে। এরপর জারিফের সাথে লিমনের আর কোনো কথা হয় না। পরবর্তীতে লিমন ঘুমিয়ে পড়ে।

পরে বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিসিপ্লিনের জারিফ, তামিম ও পল রুমে ঢুকে লিমনকে ঘুম থেকে তুলে ‘কথা আছে’ বলে হলের বাইরে ডেকে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু লিমন তাদের মতিগতি ভালো না বুঝতে পেরে বাইরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন লিমন বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হল চত্বরে বসার কথা বলে। এরপর লিমন ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের তামিমের সাথে কথা বলতে গেলে হঠাৎ করে জারিফ লিমনের বুকে লাথি মেরে ফেলে দেয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, জারিফ লিমনকে লাথি মারার পরই আস্ত ইট তুলে মাথায় আঘাত করে। আঘাত করার পর লিমনের মাথায় প্রচুর রক্তপাত শুরু হলে সে হলে ফিরতে চায়। কিন্তু তখন তামিম তাকে হলে যেতে বাধা দেয় এবং অন্য কোথাও নিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মাথায় প্রচুর রক্তপাত হওয়ার কারণে লিমন তৎক্ষনাৎ তার হলের রুমে গিয়ে বিষয়টি সিনিয়দের জানায়। এরপর তারা লিমনকে চিকিৎসার জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিকেল কলেজে (খুমেক) নিয়ে যায়। তার মাথার ক্ষত স্থানে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে রাত ২টার সময় ঘুম থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। আমার কাছে এটি খুবই অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তাদের দেখে মনে হয়েছে তারা আমাকে মার্ডার করার উদ্দেশ্যে এভাবে আমার ওপর শারীরিক নির্যাতন করে। আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন কিছু করার সাহস না পায়।

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জারিফের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রতিবেদকের পরিচয় জেনে কোনো মন্তব্য না করে পাঁচ মিনিট সময় চেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে তিনি আর যোগাযোগ করেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, আমি ঘটনার ব্যাপারে গতরাতেই অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে খান জাহান আলী হল প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ওই তদন্তের প্রতিবেদন পেলেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ