ঢাকা, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০, ৮ জিলকদ ১৪৪৪

মন্ত্রী-এমপিদের খুশি করতে এমপিও হচ্ছে ১০০ প্রতিষ্ঠান!

প্রকাশনার সময়: ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:০৯ | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:১৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপিদের খুশি করতে দেশের আরও ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ৮৩টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এ তালিকা আরও বাড়ানো হবে। দ্বিতীয় ধাপে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা থাকবে— বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এমপিওভুক্তির এ কার্যক্রমে বিশেষ বিবেচনায় এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এবং জনবল কাঠামোর কোনো শর্ত মানা হচ্ছে না। কেবল রাজনৈতিক বিবেচনায় যাচাই-বাছাই ছাড়া প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক নিশ্চিত করেছে।

সূত্র মতে, বিশেষ বিবেচনায় প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত হলেও গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ৮৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির জন্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিকের ৩২টি, মাধ্যমিকের ১৫টি, উচ্চমাধ্যমিকের ১২টি, উচ্চমাধ্যমিক কলেজের ২০টি এবং ডিগ্রি কলেজের ছয়টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এমপিওভুক্তির পর এই ৮৩টি প্রতিষ্ঠানের পেছনে সরকারের বার্ষিক খরচ হবে ৩২ কোটি ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ৯১০ টাকা।

মন্ত্রণালয়ের এমপিও শাখা সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক যুগ বন্ধ থাকার পর ২০১৮ সাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির অনুমোদন দেয় সরকার। এমপিওজট কমাতে প্রতি বছর নতুন করে এমপিওভুক্তি দেওয়া হবে বলে জানান তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এরপর দুটি এমপিও দিলেও সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও এমপিদের নির্বাচনী এলাকার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে যায়। ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ছিল এমন প্রতিষ্ঠানও ওই তালিকায় থেকে যায়।

এখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা না হলে ভোটে প্রভাব পড়বে— এমন যুক্তি দেখিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করা হয়েছে। ইতিবাচক সম্মতি পাওয়ার পর মন্ত্রী ও এমপিরা ডিও লেটার দিয়েছেন। প্রথম তালিকায় এ সংখ্যা ৩৩টি থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে মঙ্গলবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩টিতে।

এমপিও শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, গত সোমবার ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকার সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার আরও দুটি প্রতিষ্ঠানের তালিকা আমাদের কাছে আসে। প্রতিদিনই এ তালিকা বাড়ছে।

জানতে চাইলে এমপিও যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত-সচিব (মাধ্যমিক- ২) আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ বলেন, কতটি প্রতিষ্ঠান এমপিও হবে তার তালিকা মন্ত্রীর দপ্তরে আছে।

কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে তালিকা করা হয়েছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, তালিকা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলার আমি কেউ নই।

তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান দাবি করেন, কোনো রাজনৈতিক বিবেচনা নয়, যোগ্যতার মাপকাঠিতে এমপিও দেওয়া হচ্ছে।

নয়াশতাব্দী/জেডএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ