নয়া শতাব্দী অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা আমাদের যে অঙ্গীকার, সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন আমরা করতে চাই এটাকেই তারা সমর্থন দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাতে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। অতএব আমরা আমাদের যে অঙ্গীকার, সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন আমরা করতে চাই এটাকেই তারা সমর্থন দিয়েছেন। এতে চিন্তার কিছুই নেই।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত ভিসানীতির প্রতিক্রিয়া এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা বাংলাদেশে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রীর যে আগ্রহ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সেটাকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে নেওয়ার জন্য তারা এটা করেছে। সুতরাং এটা করেছে ভালো হয়েছে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ওপর বিশ্বাস রাখে এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকারে আসতে চায়। আমরা গণতান্ত্রিক সরকার চাই। আমরা স্বচ্ছ নির্বাচন করে যাব। জ্বালাও-পোড়াও চাই না। আমেরিকা যে নীতি করেছে এতে করে জ্বালাও-পোড়াও দলরা একটু সচেতন হবে। জ্বালাও-পোড়াও ও রাস্তা দখল করে আন্দোলন, এটা কমবে।
নতুন মার্কিন ভিসানীতির ফলে বাড়তি চাপ অনুভব করছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না, বাড়তি কোনো চাপ নেই। তারা তাদের কাজ করেছেন, আমরা আমাদের কাজ করেছি।
এতদিন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের নীতি তারা জানাক, আমি কেন জানাব। তাদেরকেই জানাতে দেন, তারা সেটি জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে চিঠি দিয়েছেন, অপূর্ব চিঠি দিয়েছেন, বললে চিঠির ভাষ্যটা বুঝতে পারবেন, সেই চিঠিতে অত্যন্ত সুন্দর কথা বলেছেন। চিঠিতে এক জায়গায় বলেছেন, ‘এই নীতি বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়ক হবে। আর গণতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি (নির্বাচন) যেকোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বাধাগ্রস্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র যাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানপোড়ন নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক।
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে বুধবার নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
বিবৃতেতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে আমি আজ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ২১২ (এ) (৩) (সি) (৩সি) ধারার আওতায় নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে।
বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নতুন এ নীতির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পরে বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাস থেকে দেওয়া এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে- ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেওয়া এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ